হুমায়ুন আহমেদের প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস

নন্দিত নরকে 

স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে যখন সবে কলেজে পা দিয়েছি তখন হাতে পেয়েছিলাম নন্দিত নরকে উপন্যাসটি। সহজ সরল ভাষায় তুলে ধরা সামাজিক চালচিত্র কিশোরি মনে দাগ কাটতে দেরি করেনি। জীবনের এত গুলো বসন্ত পাড় করেও সেই দাগ মুছতে পারি নি আমি। ব্যাক্তিগতভাবে হুমায়ুন আহমেদ স্যারের যেকোন একটি বইয়ের নাম বলতে বলা হয় তবে আমি এই উপন্যাসের নাম বলতে দেরি করবো না। লেখকের এক অন্যবদ্য সৃষ্টি এই "নন্দিত নরকে"।


লেখক পরিচিতি

বাংলা সাহিত্যের এক অন্যতম কিংবদন্তি শ্রদ্ধেয় হুমায়ুন আহমেদ। তিনি একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোট গল্পকার, নাট্যকার, চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং গীতিকার। সত্তর দশক থেকে শুরু করে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বাংলা সাহিত্য জগতে তিনি রাজত্ব চালিয়েছেন। শুধুমাত্র সাহিত্য জগতে রাজত্ব চালিয়েছেন তেমন নয়। রাজত্ব চালিয়েছেন লাখো ভক্তের হৃদয়ে। জীবনযাত্রার মাত্রাগুলোকে খুব সহজ ভাষায় কলমের আচড়ে তুলে ধরতেন সবার সামনে। নন্দিত নরকে তার প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস।


বইয়ের বিবরণ

  • বইয়ের নাম- নন্দিত নরকে 
  • ধরন- সামাজিক
  • লেখক- হুমায়ূন আহমেদ (১৯৪৮-২০১২)
  • প্রকাশনাকাল- ১৯৭২
  • প্রকাশক- খান ব্রাদার্স এন্ড কোং (প্রথম প্রকাশ), দিব্য প্রকাশ (দ্বিতীয় প্রকাশ)

কাহিনি সংক্ষেপ

চার ভাই-বোনের মধ্যে বড় মেয়ে রাবেয়া বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। তার এক বছরের ছোট খোকা যে কিনা মাস্টার্স পরীক্ষার্থী, এর পর বেখেয়ালী স্বভাবের মন্টু, যে রাবেয়ার বাবার বউ এর ছেলে আর সবচেয়ে ছোট মেয়ে রুনু। ছয় সদস্যের এ পরিবারটির সাথে থাকে তাদের বাবার ভার্সিটি জীবনের বন্ধু শফিক। শফিক সাহেবকে তাদের বাবা তাদের বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছিলেন। শফিক একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন সেই সাথে রাবেয়াদের ভাই-বোনদের পড়ান।

এক দুপুরে একদিন রাবেয়াকে পাওয়া যাচ্ছিলো না। তখন স্কুল থেকে ফেরার সময় মাস্টার কাকা তাকে পেয়ে বাড়িতে নিয়ে আসে। কিছুদিন যাওয়ার পর রাবেয়ার মা শাহানা বুঝতে  পারে  যে রাবেয়া সন্তান সম্ভবা। কিন্তু মানসিকভাবে অসুস্থ রাবেয়া কিছুই বলতে পারে না। পরিবার রাবেয়াকে বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। লোকচক্ষুর আড়ালে একদিন ভোর বেলায় রাবেয়াকে গোপনে গর্ভপাত করানো হয়। কিন্তু অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রাবেয়া মারা যায়। এই ঘটনায় মন্টু সন্দেক করে মাস্টার কাকাকে। বাড়ি ভর্তি লোকজনের সামনেই তাকে কুপিয়ে খুন করে মন্টুকে ধরে নিয়ে যায় আর ঠান্ডা মাথায় মাস্টারকে খুন করার অপরাধে তার ফাঁসির রায় হয়ে যায়।শেষদ্শ্যে বাবা আর এক ভাইকে দেখা যায় জেলে গেটে অপেক্ষা করছে মন্টুর লাশের জন্যগল্পে রাবেয়া কার লালসার স্বীকার তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ না থাকলেও পাঠকদের বুঝতে অসুবিধা হবে না। 

 
ছবি সংগৃহীত





Comments

Popular posts from this blog

এক নজরে হিমু

Sajek Valley- The tourist attraction of Bangladesh